Header Ads

লালসালু সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ



   লালসালু উপন্যাসের সমাজ বাস্তবতা

"লালসালু" একটি সামাজিক সমস্যামূলক উপন্যাস এর বিষয় যুগ যুগ ধরে শেকর গারা কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস ও ভীতির সজীবন আকাঙ্খার দ্বন্দ্ব। গ্রামবাসী সরলতা ও ধর্মবিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ভন্ড ধর্ম ব্যবসায়ী মসজিদ প্রতারণার জাল বিস্তারের মাধ্যমে বিস্তারের মাধ্যমে কিভাবে নিজের শাসন ও শোষণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন বিবরণের সমৃদ্ধ লালসালু উপন্যাস। কাহিনী ছোট সাধারণ ও সামান্য কিন্তু এর গ্রন্থনা ও বিন্যাস অত্যন্ত মজবুত লেখক সাধারন একটি ঘটনাকেও অসামান্য নৈপূণ্য বিশেষণে আলো ফেলে তাৎপর্যমণ্ডিত করে তুলেছেন।
শ্রাবনের শেষে নিরাক পড়া মধ্যাহ্ণে মহববত নগর মসজিদের প্রবেশ নাটকের দৃশ্য টির মাধ্যমে রয়েছে তার ভন্ডামী ও   লালসালু উপন্যাসের সমাজ বাস্তবতা।

মাছ শিকারের সময় তারকাদের দেখে যে মতিগঞ্জ সড়কের ওপর একটি অপরিচিত লোক মোনাজাতের ভঙ্গিতে পাথরের মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে আছে। পরে দেখা যায় ওই লোকটি গ্রামের মাতব্বর খালেক ব্যাপারির বাড়িতে সমবেত গ্রামের মানুষ কে তিরস্কার করেছেন, অবতারণা করে মসজিদ নামে ওই ব্যক্তি জানায় যে পীরের স্বপ্নদেশের মাজার তদারকির জন্য তার এই গ্রামে আগমন আর তিরস্কার ও স্বপ্নদেশের বিবরণ শুনে গ্রামের মানুষ ভয়ে এবং শ্রদ্ধায় এমন বিগত হয়েছে। তার প্রতিটি হুকম তারা পালন করে গভীর আগ্রহে গ্রাম প্রান্তের বাজার সড়ক অবর দ্রুত পরিষ্কার জন্য করা হয় ঝালর ওয়ালা লালসালুতে ঢেকে দেয়া হয় কবর ।আর ফেরার অবকাশ থাকে না কবরটি অচিরেই মাজার এবং মসজিদ এর শক্তির উৎস পরিণত হয় ।যথারীতি সেখানে আগরবাতি মোমবাতি জ্বলে ভক্ত প্রার্থীরা সেখানে টাকা-পয়সা দিতে থাকে প্রতিদিন ।কবরটি এক মোদাচ্ছেরের বলে শনাক্তকরণের মাধ্যমেও থাকে মজিদের সুগভীর চতুর য মোদাচ্ছের পিরে কথাটির অর্থ নাম-না-জানা। মজিদের স্বাগত সংলাপের আজায় শস্যহীন  অঞ্চল থেকে ভাগ্যান্বেষণে বেরিয়ে পড়া মসজিদ নিজ অস্তিত্ব রক্ষার্থে এমন মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে ।আসলে ঐ প্রতিক্রিয়ার ধর্মব্যবসায়ীদের অধিপত্য বিস্তার ঘটানো এদেশে গ্রাম অঞ্চলে বহুকাল ধরে বিদ্যমান । সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ গ্রামীণ সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যথাযথভাবেই এখানে তুলে ধরেছেন ।আয় দিয়ে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মজিদ ঘরবাড়ি ও জমিজমার মালিক হয়ে বসে এবং আর ভুমির এক অনিবার্য আকাঙ্ক্ষা শক্ত-সামর্থ্য লম্বা-চওড়া জাট বিধবা যুবতী কে বিয়ে করে ফেলে ।আসলে ইস্ত্রির রহিমা ঠান্ডা, ভীত ,মানুষকে আনুগত্য করে পেতে হয়না মসজিদ ।কারণ রহিমার মনেও রয়েছে গ্রামবাসী মতো তীব্র খোদাভীতি। স্বামী যা বলে রহিমা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে  রহিমার বীর সংস্থা স্বামী অলৌকিক শক্তির অধিকারী প্রতিষ্ঠা লাভের সাথে সাথে মজিদ ধর্ম কর্মের এর পাশাপাশি সমাজের কর্তাব্যক্তি হয়ে ওঠে গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপদেশ নির্দেশ দেয় গ্রাম্য সালিশে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্রধান ব্যক্তি। এক্ষেত্রে মাতব্বর খালেক বেপারি তার হয় সহায়ক শক্তি। ধীরে ধীরে গ্রামবাসীর পারিবারিক জীবনেও নাক গলাতে থাকে সে। তাহেরের বাপ-মার মধ্যকার একান্ত পারিবারিক বিবাদ কে কেন্দ্র করে তাহেরের পাপের কর্তৃত্ব নিয়ে এসে প্রশ্ন তোলে নিজ মেয়ে গায়ে হাত তোলার অপরাধে হুকুম করে মেয়ে কাছে মাপ দেওয়ার এবং সেই সঙ্গে মাজারে পাঁচ পয়সার সিন্নি there ।আর সহ্য করতে না পেরে তাহেরের বাপ শেষ পর্যন্ত নিরুদ্দেশ হয়। খালেদ ব্যাপারে নিঃসন্তান প্রথম স্ত্রী আমেনা সন্তান কামনা অধীর হয়ে মসজিদের প্রতিদ্বন্দী পীরের প্রতি আস্থাশীল হলেন মজিদ আকসার দিতে পিছপা হয়না। চরিত্রে কলঙ্ক আরোপ করে খালেক বেপারি এ দিয়ে তার তালাক দিতে বাধ্য করে মজিদ কিন্তু তবু মাজার এবং মাজারের পরিচালক ব্যক্তির প্রতি আমেনা বা তার স্বামীর কারোরই কোন অভিযোগ উত্থাপিত হয় না ।গ্রামবাসী যাতে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে মসজিদের মাজারকেন্দ্রিক থেকে সরে যেতে না পারে সেজন্য সে শিক্ষিত যুবক আকাশে বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে। সে আকাশকে স্কুল প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ভঙ্গ চুরমার করে দেয় মজিবুর প্রক্রিয়া কাজি গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয। এভাবে একের পর এক ঘটনার মাধ্যমে উপন্যাসিক সমাজ ও মানুষের বাস্তব চিত্র লালসালু উপন্যাসের ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পি।সামাজিক হিসেবে বাংলা সাহিত্যিক অবশ্য সংযোগ  লালসালুর প্রধান উপাদান সমাজবাস্তবতা গ্রামীণ সমাজ এখানে অন্ধকারাচ্ছন্ন চুদলে এখানে সক্রিয় এই অদৃশ্য এখানকার মানুষ ভাগ্য ও অলৌকিকত্ব গভীরভাবে বিশ্বাস করে দৈবশক্তির লীলা দেখে নির্ধারণ ভয় পেয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখে নয়তো ভক্তিতে আপ্লুত হয় কাহিনীর উন্নয়ন হতে দেখা যায় শস্যের চেয়ে টুপি বেশি গ্রাম থেকে ভাগ্যের সন্ধানে উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে যে গ্রামে বসতি নির্মাণ করতে চাইছে গ্রামে কিভাবে কুসংস্কারের অন্ধবিশ্বাসের জয়জয়কার এ এমনই এক সমাজ তার রন্ধ্রে-রন্ধ্রে কেবলই শোষণ আর শোষণ কখনো ধর্মীয় কখনো অর্থনৈতিক প্রতারণা শঠতা আর শাসনের জটিল সংখ্যা বিন্যাস শেকর জীবনের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পড়তে পড়তে পারে না আর ওইসব শেকল দিয়ে প্রতিনিয়ত ও শোষণ করা হয় জীবনের প্রাণরস আনন্দ প্রেম প্রতিবাদ সততা এসব পদ এবং বুদ্ধি ওই দৃশ্যের দেয়ালে ঘেরা সমাজের ভেতর প্রায় ঢাকা থাকে এই কাজে গোস্বামী হাজার এবং ধর্মব্যবসায়ী একজন আর একজনের সহযোগী কারণ 7 এর ব্যাপারে তারা একটা পথ তাদের এক একজনের আছে মাজার অন্যজনের আছে নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখা যায় অন্য কোথাও নয় আমাদের চারপাশে রয়েছে এরূপ সমাজব্যবস্থা বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে গ্রামাঞ্চল সমাজের ভেতর ও বাইরের আজও একই রকময়

কোন মন্তব্য নেই

Zemdega থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.